লা ফিনালিসিমার ট্রফি নিয়ে লিওনেল মেসিদের উচ্ছ্বাস।ইউরো কাপ জয়ী ইতালিকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে মেসিদের উল্লাস।খেলার প্রথম থেকেই মেসিদের আক্রমণে দিশেহারা হয়ে যায় ইতালি। একটা সময় মেসিকে ঘিরে ধরেছেন জর্জো কিয়েল্লিনিসহ ইতালির চারজন খেলোয়াড়। মেসিকে আটকাতে তাঁর জার্সিও টেনে ধরেছেন কিয়েল্লিনি। তবুও ছাড় পেলেন না মেসিদের আক্রমণ থেকে।
ইতালির জমাট রক্ষণের কড়া পাহারা ভেদ করে বারবারই বেরিয়ে যাচ্ছিলেন মেসি। ১৫ থেকে ২৫ মিনিটের মধ্যে তিন-তিনবার ইতালির রক্ষণ ভেদ করে বেরিয়ে গেছেন। কিন্তু গোল পাননি বা অন্য কাউকে দিয়ে গোল করাতে পারেননি। অবশেষে ২৭ মিনিটে মেসি সফল হলেন। ইতালির পেনাল্টি বক্সের বাঁ প্রান্ত থেকে রক্ষণচেরা এক পাস দিলেন লাউতারো মার্তিনেজকে। ডান পায়ের আলতো ছোঁয়ায় আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দিলেন তিনি। ৪৪ মিনিটে লাউতারো মার্তিনেজের অসাধারণ এক থ্রু পাস থেকে আনহেল দি মারিয়ার গোলে ২-০ গোলে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা।
২-০ গোলে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয়ার্ধ শুরু করা আর্জেন্টিনা ইতালিকে যেন আরও চেপে ধরতে চাইল।দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই একের পর এক আক্রমণে ইতালিকে রীতিমতো বিপর্যস্ত করে ফেললেন মেসিরা।ম্যাচটি ছিল মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই। ইউরোপ আর লাতিন আমেরিকার যে লড়াইয়ে অনেক বছর ধরেই ইউরোপের জয়জয়কার। আর্জেন্টিনা টানা ৩১ ম্যাচ অপরাজিত থেকে ওয়েম্বলিতে খেলতে নেমেছিল কাল।
মেসি দেখা দিয়েছেন মেসির রূপে। তবে এই ম্যাচে আলাদা করে নজর কেড়েছেন আনহেল দি মারিয়া। ইতালির রক্ষণভাগে রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়েছেন তিনি। ৪৯ থেকে ৬১…এই ১২ মিনিটে তিনটি গোলের সুযোগ তৈরি করেছে আর্জেন্টিনা। তিনটিরই শেষ দি মারিয়ার মাধ্যমে। ৪৯ ও ৫৯ মিনিটে দি মারিয়ার বাঁ পায়ের দুর্দান্ত দুটি শট দারুণ দক্ষতায় বাঁচিয়েছেন ইতালির গোলকিপার জিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মা। ৬১ মিনিটে দি মারিয়ার অসাধারণ বাঁকানো শটও গোলে ঢুকতে পারেনি দোনারুম্মার কারণেই।
তিনটি সুযোগের দুটিই তৈরি হয়েছিল মেসির অসাধারণ ড্রিবলিং থেকে।খেলায় ইতালি এমনই অদৃশ্য যে, বিশ্বকাপে আজ্জুরিদের বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করতে না পারাটাকে আর দুর্ঘটনা বলে মনে হচ্ছে না। আর্জেন্টিনার আরেকটি গোল পাওয়াকে মনে হচ্ছিল শুধুই সময়ের ব্যাপার। দোনারুম্মা দেয়াল হয়ে না দাঁড়ালে তা একাধিকই হতো। যোগ করা সময়ের চতুর্থ মিনিটে মেসির পাস থেকে আর্জেন্টিনার তৃতীয় গোলটি করেছেন বদলি হিসেবে নামা পাওলো দিবালা। যারা ম্যাচটি দেখেছেন, তারা বলবেন, এই স্কোরলাইনও আসলে ম্যাচের আসল চিত্রটা বোঝাতে পারছে না। কোপা আমেরিকার পর লিওনেল মেসির হাতে আরেকটি ট্রফি মাস ছয়েক পরের বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনাকে নিশ্চিতভাবেই বড় কিছুর স্বপ্ন দেখাচ্ছে।