দেশের শাসনব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তনের আলোচনা চলছে, কিন্তু যে পদ্ধতি নিয়ে এত কথা, সেই ‘আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব’ বা পিআর (PR) সিস্টেম সম্পর্কেই জানেন না দেশের অর্ধেকেরও বেশি ভোটার! নির্বাচনকে সামনে রেখে চালানো এক জরিপে উঠে এসেছে এই চমকপ্রদ তথ্য, যা ভবিষ্যতের জন্য নীতি-নির্ধারকদের ভাবনায় ফেলবে।
ইনোভেশন কনসাল্টিং নামের একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, দেশের ৫৬ শতাংশ ভোটার পিআর পদ্ধতি সম্পর্কে অবগত নন। রবিবার সকালে প্রকাশিত ‘জনগণের নির্বাচন ভাবনা’ শীর্ষক এই জরিপে ১০,৪১৩ জন ভোটারের মতামত নেওয়া হয়।
তবে আশার কথা হলো, এই বিষয়ে নবীন প্রজন্ম প্রবীণদের চেয়ে অনেক বেশি সচেতন এবং তাদের মনোভাবও বেশ ইতিবাচক। এটি প্রমাণ করে যে, নতুন প্রজন্মের ভোটাররা দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থার পরিবর্তনে আগ্রহী।
পিআর সিস্টেমের ধারণা না থাকলেও, নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে মানুষের আগ্রহ তুঙ্গে। জরিপ অনুযায়ী, আগামী বছর নির্বাচন হলে ৯৪.৩ শতাংশ মানুষ ভোট দিতে যাবেন। এর মধ্যে ৮৬.৫ শতাংশই চান নির্বাচনটি ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হোক।
তবে নির্বাচন ঘিরে ভোটারদের মনে বেশ কিছু উদ্বেগও কাজ করছে। ৫৬ শতাংশ উত্তরদাতা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, বিশেষ করে গত ছয় মাসে চাঁদাবাজি বৃদ্ধি পাওয়া নিয়ে চিন্তিত। যদিও প্রায় ৭৭.৫ শতাংশ মানুষ নির্ভয়ে ভোট দিতে পারবেন বলে বিশ্বাস করেন, তবে পুলিশ-প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে তরুণ প্রজন্মের মনে কিছুটা সংশয় রয়েছে।
জরিপে আরও দেখা যায়, ৭৮.৭ শতাংশ মানুষ অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মকাণ্ডকে ইতিবাচকভাবে দেখলেও, উচ্চশিক্ষিত শ্রেণি এবং বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা সরকারের কাজে ততটা সন্তুষ্ট নন।
এই সমীক্ষা স্পষ্ট করে দিচ্ছে যে, নির্বাচনের প্রতি গণমানুষের আস্থা ও আগ্রহ থাকলেও, নতুন পদ্ধতি সম্পর্কে অজ্ঞতা এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগগুলো দূর করা নির্বাচন কমিশনের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হবে।