চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের বিএম কনটেইনার ডিপোতে গতকাল রাতে আগুন লেগে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে প্রায় ৪০ জনের প্রাণহানি ঘটে এবং হতাহতের সংখ্যা শতাধিক।
চট্টগ্রামের পাশাপাশি ফেনী, নোয়াখালীসহ কয়েকটি অঞ্চলের ফায়ার সার্ভিস ইউনিট মিলেও আগুন এখনো থামানো যাচ্ছে না। এরই মধ্যে সেনাবাহিনীর সদস্যরাও নেমেছেন আগুন নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু ডিপোতে বিপুল পরিমাণে রাসায়নিক থেকে যাওয়ায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
পুরো দেশের মানুষই এখন সীতাকুন্ডের ডিপোর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার প্রার্থনায়। প্রার্থনায় ক্রিকেটাররাও। গতকাল রাত থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একের পর পোস্ট করে চলেছেন তামিম ইকবাল, মাশরাফি বিন মুর্তজা, মুশফিকুর রহিম, লিটন দাসরা।
কেউ আশপাশের মানুষকে রক্ত দিয়ে, পানি সরবরাহ করে সাহায্যে নেমে পড়ার আহ্বান জানাচ্ছেন, কেউ বা আহত-নিহতদের কথা ভেবে কষ্ট পাচ্ছেন। সীতাকুন্ডের কাছাকাছি একটি ফেনীর ছেলে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনই যেমন শিউরে উঠছেন সেখানে থাকলে তাঁর কী হতে পারত ভেবে।
ঘন্টাখানেক আগে ফেসবুক পেইজে বাংলাদেশ দলের অলরাউন্ডার সাইফউদ্দিন লিখেছেন, ‘এখনো আগুন নিয়ন্তণে আনা সম্ভব হয়নি! ছবি, ভিডিও আর সাথে নিউজগুলো যত সামনে আসছে, মনে হচ্ছে, আমি ওখানে থাকলে আমার কী হতো? আল্লাহর কাছে অশেষ শোকরানা; কিন্তু অর্ধশতাধিক মানু্ষ নিহত, ৪৫০-এর অধিক মানুষের অবস্থা সংকটাপন্ন। আল্লাহ সহায় হোন। যে যার অবস্থা থেকে যত দ্রুত সম্ভব এগিয়ে আসুন।’
চট্টগ্রামের ছেলে, বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অধিনায়ক তামিম ইকবাল গতকাল আগুন লাগার পরই তাঁর স্ট্যাটাসে আহ্বান জানিয়েছেন, ‘চট্টগ্রামের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সকলকে অনুরোধ করব চট্টগ্রাম মেডিকেলে অবস্থান করার জন্য। সীতাকুণ্ডের কন্টেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়েছে। হতাহতের সংখ্যা অনেক, প্রচুর পরিমাণ রক্তের প্রয়োজন হচ্ছে। দয়া করে যে যেখানে আছেন সাধ্যের মধ্যে থাকলে এক্ষুনি ছুটে যান, আপনার এক ব্যাগ রক্ত হয়তো বাঁচিয়ে দিতে পারে একটি প্রাণ। আপনার পরিচিত রক্তযোদ্ধা বন্ধুদেরও আসার জন্য অনুরোধ করুন। মানুষ মানুষের জন্য।’
তামিম ইকবাল বলেন আমাদের সবার দোয়া যারা আক্রান্ত হয়েছেন তাঁদের সঙ্গে, তাঁদের পরিবারের সঙ্গে। এরকম দুর্ঘটনা আগেও হয়েছে। দুর্ঘটনাটা চট্টগ্রামে হয়েছে, কিন্তু আমরা যখনই এরকম কোনো কিছু হয় আমরা দেশ হিসেবে একসঙ্গে এগিয়ে আসি। আমরা যে জায়গায় আছি না কেন ঢাকা, খুলনা…আমাদের সবাইকে নিজ দিক থেকে যতটুক পারি ছোট বড় যা সহযোগিতা করতে পারি এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি তারা সেরা চিকিৎসা সেবা পাবে, তারা সেরা সহযোগিতা পাবে সবার কাছ থেকে। তারা সুস্থ হয়ে উঠবে।
সাহায্যে এগিয়ে আসার আহ্বান ছিল টেস্ট দলে নবনির্বাচিত সহ-অধিনায়ক লিটন দাস, অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ, পেসার তাসকিন আহমেদের কণ্ঠেও। আর উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিমের প্রার্থনায়, ‘চট্টগ্রাম থেকে আসা খবরটা শুনে খুব খারাপ লাগছে। আহত-নিহতদের পরিবারের জন্য প্রার্থনা করি। শক্ত থাকো, সীতাকুন্ড। আল্লাহ আমাদের সবাইকে নিরাপদ রাখুন।’